শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ঢাকা শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
The Daily Post

কুষ্টিয়ায় গুলিতে দুজন আহত আ.লীগ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ায় গুলিতে দুজন আহত আ.লীগ নেতাসহ তিনজন গ্রেপ্তার 

কুষ্টিয়ায় কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছেনা নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জের ধরে এবার কুষ্টিয়া- ২ আসন মিরপুরের স্বতন্ত্র-এমপির সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়েছে উপজেলা আ.লীগ নেতা ও তার সমর্থকরা। এতে গুলিবিদ্ধ হয়েছে স্বতন্ত্র এমপির ২ সমর্থক। 

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও আ.লীগ নেতা আতাহার আলীর লাইসেন্সকৃত পিস্তলের ছোড়া গুলিতে রেজাউল হক নামে পথচারী এক ভ্যানচালক এবং হাসেম গাজী নামে এক আ.লীগ কর্মীসহ দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। 

তাদের আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে একজনের অবস্থা অবনতি ঘটলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। এই ঘটনায় মিরপুর থানা পুলিশ সাবেক চেয়ারম্যান ও মিরপুর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আটক করেছে। 

গত শনিবার সন্ধ্যায় মিরপুর উপজেলার ফুলবাড়িয়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া বাজারে  গুলিবর্ষনের এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন- কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন গাজীর ছেলে আ.লীগ কর্মী হাসেম গাজী এবং বহলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া এলাকার মৃত আব্দুল মজিদের ছেলে ভ্যানচালক রেজাউল।

স্থানীয় ও প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, গত শনিবার সন্ধ্যায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিরপুর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাহার আলী লোক পাঠিয়ে নিজ বাড়ির সামনে থেকে হাসেম গাজীকে শিমুলিয়া বাজারে ডেকে এনে প্রকাশ্যে লোকজনের সামনে কথা কাটাকাটি শুরু করে। এক পর্যায়ে আতাহার আলী নিজ নামীয় লাইসেন্সকৃত নাইন এমএম পিস্তল দিয়ে এলোপাতারি গুলিবর্ষন শুরু করেন। 

এসময় সেখানে থাকা ভ্যানচালক রেজাউল ও হাশেম গাজী গুলিবিদ্ধ হন। পরে স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ রক্তাক্ত জখম গুরুতর আহত দুজনকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।

গুলিবিদ্ধ গুরুতর আহত হাশেম গাজীর ছেলে সোহেল জানান, গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমার বাবা নৌকা মার্কার ভোট না করে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ট্রাক প্রতীকের ভোট করাকে কেন্দ্র করে মিরপুর উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ  সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়াম্যান আতাহার আলীর সঙ্গে দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ঘটে। 

বেশ কিছুদিন ধরে আতাহারের ক্যাডার বাহিনী আমার বাবাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে আসছিল। গত কয়েকদিন পূর্বে আমাদের বাড়ির উঠানে ককটেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে আতাহারের লোকজন। আজকেও আতাহার আলী একদম পরিকল্পিতভাবে লোকজন সঙ্গে করে এসে বিদেশি পিস্তল ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রসহ হামলা করেছে।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাপস কুমার সরকার জানান, গত শনিবার সন্ধার পর দুজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। 
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে মিরপুর থানার ওসি মোস্তফা হাবিবুল্লাহ জানান, এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ফুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আতাহার আলী ও তার ভাতিজা রিগ্যান এবং ভাগ্নে আয়নালকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। এছাড়া ঘটনাস্থলে নতুন করে উত্তেজনা ঠেকাতে ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এই ঘটনায় জাসদ সভাপতি সাবেক এমপি  হাসানুল হক ইনুর দিকে আঙ্গুল তুলে প্রশাসনের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মিরপুর-ভেড়ামারা (কুষ্টিয়া-২) আসনের স্বতন্ত্র এমপি কামারুল আরেফীন  । তিনি বলেন, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন চলাকালে হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে থেকে প্রশাসনের ছত্রছায়া অস্ত্র উচু করে আতাহার মস্তানী করে বেড়িয়েছে। আমরা অসহায়ের মত তাকিয়ে থেকেছি। সে সময় প্রশাসন ব্যবস্থা নিলে আজ নিরীহ তিনটি মানুষ গুলিতে আহত হতো না। 

টিএইচ